আমেরিকান রাষ্ট্রপতি জো বিডেন সতর্ক করেছেন যে পবিত্র রমজান মাসের পূর্বে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি না হলে পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ হয়ে উঠবে। বাইডেন গতকাল, মঙ্গলবার এই মন্তব্য করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়া হামাসের ওপর নির্ভরশীল।
গাজায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে মিশরের কায়রোতে আলোচনা চলমান রয়েছে । এদিকে, দ্বিতীয়বারের মতো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী গাজায় সহায়তা প্রদান করেছে।
বাইডেন তার ইসরাইলি মিত্রদের জানিয়েছেন যে গাজায় আরও সহায়তা প্রদানে যে কোনও অনিচ্ছা জটিলতার কারণ হতে পারে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর নির্বিচারে হামলার মধ্যে গাজায় আসন্ন দুর্ভিক্ষের বিষয়ে জাতিসংঘ সতর্ক করেছে।
গাজায় সহায়তার ক্রমবর্ধমান প্রয়োজনীয়তা এবং নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইলের প্রতি হতাশা বাড়িয়ে তুলছে । অন্যদিকে, মুক্তির নিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও হামাসের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে অস্বীকার করার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও হতাশ। চলমান এ সংকটের মধ্যে বাইডেনের কাছ থেকে এই ধরনের বিবৃতি এসেছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে বাইডেন বলেন, ‘এটি এখন হামাসের হাতে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে ইসরাইল যুদ্ধবিরতি আলোচনায় সহযোগিতা করছে। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব যুক্তিসঙ্গত, এবং তারা কয়েক দিনের মধ্যে এই বিষয়ক সিদ্ধান্ত জানতে পারবে। তবে এখন যুদ্ধবিরতি খুব ই প্রয়োজন।
বাইডেন আরো বলেন , ”রমজানের কারণে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। রমজানের সময় যদি এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে, তাহলে ইসরাইল ও জেরুজালেমের পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থির হয়ে উঠতে পারে।”
চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে পবিত্র রমজান মাস ১০ বা ১১ ই মার্চ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরাইলের ওপর হামলা চালায়। জবাবে ইসরাইল গাজায় বিমান হামলা শুরু করে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরাইলে হামাসের হামলায় প্রায় ১,১৬০ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের অধিকাংশই ছিল অ-ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় জড়িত থাকার জন্য ইসরাইল প্রায় ২৫০ জনকে দায়ী করেছে। ধারণা করা হচ্ছে গাজায় এখনও ১৩০ জন বন্দি রয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ৩১ জনকে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলের বিমান হামলার জবাবে গাজা নিরলস আক্রমণের মুখে পড়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় ৩০ হাজার ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।