ইরানের প্রেসিডেন্টের চিফ অফ স্টাফ গোলাম হোসেন ইসমাইলি, প্রেসিডেন্ট রাইসির সাম্প্রতিক পূর্ব আজারবাইজান সফরে তার সঙ্গে ছিলেন। তিনি প্রেসিডেন্ট রাইসির সঙ্গে ফেরার পথে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন।
রবিবার, ৩০ মে প্রেসিডেন্ট রাইসি তার সঙ্গীদের নিয়ে সকাল ৬ টায় তাব্রিজের উদ্দেশ্যে তেহরান ত্যাগ করেন এবং সকাল ৭.১০ মিনিটে অবতরণ করেন। তখন পর্যন্ত আবহাওয়া পরিষ্কার ছিল, এবং রাইসির প্রথম ইভেন্ট ছিল আজারবাইজানের একটি বাঁধের উদ্বোধন করা।
পরে তারা আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতির সাথে একটি কূটনৈতিক বৈঠক করেন যা এক ঘন্টারও বেশি সময় স্থায়ী হয়।
সভা এবং জোহরের নামাজের পরে, গ্রামবাসীরা তাদের উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করতে রাষ্ট্রপতি রাইসির সাথে দেখা করতে আসেন। সভাটি ভালভাবে শেষ হয়েছিল, এবং পরবর্তীতে আবহাওয়া পরিষ্কার থাকায় প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সঙ্গীরা তাব্রিজে ফিরে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টারে উঠেছিল।
হেলিকপ্টারে উঠার আধা ঘন্টার মধ্যে হেলিকপ্টারটি মেঘের সম্মুখীন হয়। মেঘের পরিমান বেশি থাকার কারণে পাইলট, ক্যাপ্টেন মুস্তাফাভি, হেলিকপ্টারটিকে মেঘের উপরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রেসিডেন্ট রাইসি ছিলেন মাঝখানের হেলিকপ্টারে, তার সামনে একটি হেলিকপ্টার এবং পেছনে আরেকটি হেলিকপ্টার ছিল।
আধঘণ্টা মেঘের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার পর ক্যাপ্টেন লক্ষ্য করলেন লিড হেলিকপ্টারটির কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
নিখোঁজ হেলিকপ্টারের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যখন ব্যর্থ হয় তখন পাইলট চারদিকে ঘুরে খোঁজ নেওয়া শুরু করেন।পরবর্তীতে পাইলট মেঘের নীচে দেখারও চেষ্টা করেন কিন্তু মেঘের ঘনত্ব বেশি হওয়ায় খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন।
পরবর্তীতে রাইসিকে খুঁজে পেতে তারা পাশের সুনগুন তামার খনিতে অবতরণ করেন।
ইসমাইলি ও তার দল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোন করার চেষ্টা করলেও তখন কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিলো না। অবশেষে তারা ক্যাপ্টেন মুস্তাফাভির ফোনে একজনের ফোন পান। তার নাম আয়াতুল্লাহ আল হাশেম।
আয়াতুল্লাহ আল হাশেম ফোন করে বলেছিলেন যে তিনি আহত এবং বর্তমানে একটি উপত্যকায় আছেন কিন্তু ঠিক কোথায় তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
তবে তিনি হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন এবং বর্তমানে তিনি গাছ দ্বারা বেষ্টিত কোনো যায়গায় আছেন বলে ইঙ্গিত দেন।
খবরটি পেয়ে বাকিরা তাৎক্ষণিক দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যখন তারা দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান, ততক্ষনে প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং তার সফরসঙ্গীরা দুর্ঘটনায় মারা যায়।
প্রাথমিকভাবে বেঁচে যাওয়া আলে হাসেমও কয়েক ঘণ্টা পর মারা যান। তবে দুর্ঘটনাস্থলে বিস্ফোরণ, আগুন বা ধোঁয়ার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায় নি।