গুরুতর অভিযোগ
ঢাকা রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) কমান্ড্যান্ট শহীদ উল্লাহর বিরুদ্ধে নিয়োগের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ আদায়ের অভিযোগ করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দাখিল করা অভিযোগ অনুযায়ী, শহিদ উল্লাহ ঢাকায় পাঁচটি ফ্ল্যাট, কুমিল্লায় ৩০ বিঘা জমি এবং ঢাকার একটি অভিজাত এলাকায় একটি ফ্ল্যাট তার শাশুড়ির নামে কিনেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০১৮ সালে নিয়োগ দুর্নীতি
অভিযোগে বলা হয়েছে যে ২০১৮ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালীন ১৮৪ জন সিপাহী দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিল। দুদক এই অভিযোগগুলির তদন্ত শুরু করেছে। দুদকের সহকারী পরিচালক মনোয়ারুল ইসলাম তদন্তের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিম্নমানের সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম দিয়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শহিদ উল্লাহর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
অভিযোগ অস্বীকার শহীদ উল্লাহ
শহীদ উল্লাহ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এগুলো ভিত্তিহীন। ৫ জুলাই শুক্রবার বাংলানিউজকে তিনি জানান, দুদকের চিঠির জবাব দিয়েছেন তিনি। শহীদ উল্লাহ বলেন, “আমার নামে যে সম্পদের কথা বলা হয়েছে, সেখানে নেই। ঢাকা শহরে আমার স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে আমি ভালোভাবে চলতে পারি না।”
সম্পত্তি এবং সম্পদ
দুদক সূত্র জানায়, শহিদ উল্লাহ তার শাশুড়ির নামে ঢাকার শান্তিনগরে একটি বহুতল ভবনের তৃতীয় তলায় প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট কেনেন। শাশুড়ির আয়ের কোনো উৎস না থাকা সত্ত্বেও এই ফ্ল্যাটেই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন শহীদ উল্লাহ।
শহীদ উল্লাহ বলেন, আমার পৈতৃক সম্পত্তি ছাড়া আমার কাছে কিছুই নেই। তদন্ত করলেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।
ব্যাপক সম্পত্তি হোল্ডিং
অভিযোগে শান্তিনগরে বহুতল ভবনের পাশে শহীদ উল্লাহর মালিকানাধীন একটি ছয়তলা ভবনের কথাও বলা হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ঢাকার উত্তরায় তিনটি প্লট, রাজধানীর মুগদাপাড়ায় আরও দুটি প্লট এবং ঢাকা-কুমিল্লা মহাসড়কের পাশে কুমিল্লায় ৩০ বিঘা জমি কেনার অভিযোগ রয়েছে।
নিয়োগ থেকে অবৈধ আয়
দুদক সূত্রের দাবি, ২০১৮ সালে ১৮৪ জন সিপাহী নিয়োগ শহিদ উল্লাহর সম্পদে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। শহিদ উল্লাহ ব্যক্তিগতভাবে ৮৩ জনকে নিয়োগ দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে শেয়ার বিতরণ করেও অন্তত ১০ কোটি টাকা অবৈধ আয় করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
দুদকের তদন্ত
শহীদ উল্লাহর বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগের নথি চেয়ে গত ২৭ জুলাই চিঠি দেয় দুদক। এর মধ্যে ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের জন্য ইউনিফর্ম, বুট, মোজা, রেইনকোট, ফগার মেশিন, হ্যান্ড মাইক এবং বিভিন্ন আরএনবির পণ্যের ক্রয় সংক্রান্ত কাগজপত্র রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি অভিযোগের নথি ইতিমধ্যেই পেয়েছে দুদক।