বাংলাদেশে প্রবেশ করছে অবৈধ ফোন
অবৈধভাবে চুরি হওয়া অ্যান্ড্রয়েড ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের ফিচার ফোন ভারত থেকে কুমিল্লা সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে পাচার করা হয়। এসব ফোন ঢাকার বিভিন্ন বাজারে কম দামে বিক্রি করে আসছিল চোরাকারবারি চক্র।
গ্যাং লিডার গ্রেফতার
গ্যাং লিডার আবু তাহের কুমিল্লা-ঢাকা রুট ব্যবহার করে এসব অবৈধ ফোন রাজধানীতে আনতেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৩ শনিবার (২৯ জুন) রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে আবু তাহের (২৬) ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চুরি হওয়া মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত গ্যাং সদস্যরা
গ্রেফতারকৃত অন্য সদস্যরা হলেন মোঃ মেহেদী হাসান (২২), মোঃ রুবেল হোসেন (২৯) ও মোঃ নূর নবী (৩২)। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ৮০৮টি চোরাই মোবাইল ফোন, দুটি প্রাইভেটকার ও ৫ হাজার ৩৬৯ টাকা জব্দ করা হয়।
চোরাচালান কার্যক্রম
র্যাব-৩ এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ ফিরোজ কবির জানান, এই চক্রটি কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ মোবাইল ফোন পাচার করে। এসব ফোন বিভিন্ন গ্রাহকের কাছে কম দামে বিক্রি করা হতো। এই চক্রটি কুমিল্লা-ঢাকা রুট ব্যবহার করে রাজধানীতে ফোন পরিবহন করত।
পদ্ধতি এবং উদ্দেশ্য
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত চক্রের সদস্যরা জানায়, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এড়িয়ে কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে ভারতে তৈরি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন পাচার করে। সরকারি কর ফাঁকি দিতে এবং মুনাফা বাড়াতে ফোনগুলো কম দামে বিক্রি করা হয়েছিল।
গ্যাং লিডারের পটভূমি
মাস্টারমাইন্ড আবু তাহের তিন বছর আগে কুমিল্লার একটি মোবাইল শোরুমে সেলসম্যান হিসেবে কাজ শুরু করেন। কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান চক্রের সঙ্গে জড়িত হন তিনি। অবশেষে সে চোরাই মোবাইল ফোন ঢাকাসহ বিভিন্ন বাজারে পৌঁছে দিতে থাকে।
অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সম্প্রসারণ
তাহের দ্রুত আরও অর্থোপার্জনের জন্য তার কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে তার চক্র গত দেড় মাসে পাঁচটি চোরাই ফোনের বড় চালান ঢাকায় পৌঁছে দিয়েছে।
সহযোগীদের ভূমিকা
মেহেদী হাসান: কুমিল্লা সদর দক্ষিণের বাসিন্দা, তার ভাইয়ের পরিচিতজনের মাধ্যমে চোরাচালানের সাথে জড়িত। তিনি গত দেড় মাসে পাঁচটি বড় চালান ঢাকায় পৌঁছে দিতে সহায়তা করেছেন।
রুবেল হোসেন: পেশায় একজন চালক, প্রথমে রেন্ট-এ-কারে গাড়ি ভাড়া করতেন। তাহেরের গ্যাংয়ে যোগ দেওয়ার পর, তিনি পাচারকৃত মোবাইলগুলি সংরক্ষণ এবং সরবরাহ করার জন্য একটি প্রাইভেট কার চালান।
নূর নবী: ফেনীতে ব্যক্তিগত চালক হিসেবে কাজ করেন। তাহেরের সঙ্গে দেখা করার পর অতিরিক্ত টাকা আদায়ের জন্য চুরি করা মোবাইল পরিবহন শুরু করে।
চোরাচালান করা ফোনের অপরাধমূলক ব্যবহার
লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিরোজ কবির বলেন, যেহেতু এসব ফোনের আইএমইআই নম্বর বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) কাছে নিবন্ধিত নয়, তাই এগুলো প্রায়ই অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করা হয়।
আইনি ব্যবস্থা
লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিরোজ কবির জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।